মৃত্যুর দুই মাস পর কবর থেকে নারীর লাশ উত্তোলন
স্টাফ রিপোর্টার:
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মৃত্যুর দুই মাস পর কবর থেকে নারীর লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, মাকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে মেয়ের এমন অভিযোগে আদালতের নির্দেশে দাফনের দুই মাস পর মমতাজ বেগম নামের ওই নারীর লাশ উত্তোলন করা হয়।
গতকাল বুধবার বিকেলে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট হাসান মো. হাফিজুর রহমানের উপস্থিতিতে সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর ইউনিয়নের ছয়হিস্যা এলাকার সামাজিক কবরস্থান থেকে তার লাশ উত্তোলন করা হয়। লাশ উত্তোলনের পর মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
চলতি বছরের গত ১৮ এপ্রিল রাতের কোন এক সময় মমতাজ বেগমের মৃতু হয়। পরদিন সকালে প্রতিবেশী আত্মীয় স্বজনকে খবর দেওয়া হয়। ওই মৃত্যুর পর মমতাজ বেগমের শরীরে বিভিন্ন আঘাতের চিহ্ন থাকায় তার মেয়ে জিনাত ফাহিমা মুন্নির সন্দেহ হয়।
পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়। তবে মমতাজ বেগমের বাবা আব্দুল খালেক প্রধান ও তার পরিবারের দাবি তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন। এ মৃত্যু রহস্য সৃষ্টি হওয়ায় নিহতের মেয়ে জিনাত ফাহিমা মুন্নি বাদি হয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালতে গত ২৭ এপ্রিল একটি পিটিশন মামলা দায়ের করেন।
মামলার বাদি জিনাত ফাহিমা মুন্নি জানান, তার মায়ের সঙ্গে তার নানির বাড়ির লোকজনের জমি সংক্রান্ত সমস্যায় পারিবারিক কলহ ছিল। এ নিয়ে প্রতিদিন ঝগড়া লেগে থাকতো। এছাড়াও তার মায়ের নগদ টাকা ও সম্পত্তি নিয়ে তার পুত্রবধুর সঙ্গেও কলোহ ছিল।
গত ১৮ এপ্রিল রাতে কোন এক সময় তার মায়ের মৃত্যু হয়। এ মৃত্যু খবরটি আত্মীয়-স্বজন ও তাকে দীর্ঘ সময় পর জানানো হয়। মৃত্যুর খবর পেয়ে জিনাত ফাহিমা মুন্নি ঘটনাস্থলে গিয়ে তার মায়ের শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান ও ডান চোখ রক্তাক্ত ফুলা পান। নিহতের বাবা খালেক প্রধানের পরিবার এ মৃত্যুকে স্ট্রোক বলে জানিয়েছেন।
এসময় শরীরে চিহ্ন থাকায় জিনাত মৃতদেহের ময়না তদন্ত দাবি করেন। এক পর্যায়ে নিহতের বাবার বাড়ির লোকজন তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে দ্রæত নিহতের লাশ দাফন করেন।
জিনাত ফাহিমা মুন্নির দাবি, আমার মাকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে। তাছাড়া তার ঘরে থাকা টাকা স্বর্ণালংকার ও জায়গা সম্পত্তির দলিলপত্রের কোন হদিস পাওয়া যায়নি। কাউকে নির্দিষ্ট করে মামলা দেওয়া হয়নি।
মায়ের মৃত্যুর আসল রহস্য উদঘাটতের চেষ্টা করেছি।
পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নং ওয়ার্ড সদস্য মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আদালতের নির্দেশে ম্যাজিষ্ট্রেট ও পুলিশের উপস্থিতিতে তদন্তের স্বার্থে নিহতের লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। লাশ উত্তোলনে সর্বাত্রক সহযোহিতা করা হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নারায়ণগঞ্জ সিআইডির উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, আদালতের নির্দেশে মমতাজ বেগমের মৃত্যু সঠিক তদন্তের স্বার্থে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। লাশের ডিএনএ পরীক্ষার জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ফরোনসিক রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।
আপনার মতামত লিখুন :