বিশেষ প্রতিবেদকঃ আজ নারায়ণগঞ্জ আওয়ামীলীগ অফিসে বোমা হামলা ট্র্যাজেডি দিবস। ২০০১ সালের ১৬ জুন নগরীর চাষাঢ়াস্থ আওয়ামীলীগ অফিসে বোমা হামলায় নেতা-কর্মীসহ মোট ২০ জন নিহত হন। আহত হন সংসদ সদস্য শামীম ওসমানসহ অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী।
আলোচিত সাংসদ ও নারায়ণগঞ্জের আপাময় জনতার নয়নের মনি জননেতা এ কে এম শামীম ওসমান’কে হত্যার উদ্দেশ্যে স্বাধীনতা বিরোধী চক্র এ বর্বরোচিত বোমা হামলা চালায়। এ বর্বরোচিত বোমা হামলার দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও এ হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি আজও।
২০০১ সালের ১৬ জুন। রাত তখন সোয়া ৮টা। সংসদ সদস্য শামীম ওসমান চাষাঢ়া শহীদ মিনারের পাশে আওয়ামী লীগ অফিসে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে যেই ভেতরের কক্ষে প্রবেশ করেন, তখনই বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই টিনশেড অফিস ঘরের চাল উড়ে যায়। তখন অনেকের শরীর থেকে হাত-পা বিচ্ছিন্ন হয়ে দেয়ালে এবং বিধ্বস্ত টিনের চালে ঝুলে থাকতে দেখা যায়। আহতেরা মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিলো। পায়ের তলায় তখন বয়ে যাচ্ছিল রক্তের স্রোত। এ ঘটনায় চার নারীসহ ২০ জনের মৃত্যু হয়। আহত হন সংসদ সদস্য শামীম ওসমান সহ অর্ধশতাধিক। তাদের মধ্যে অনেকেই এখন চিরতরে পঙ্গু। ঘটনার পরদিনই আওয়ামী লীগনেতা অ্যাডভোকেট খোকন সাহা বাদী হয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের আসামি করে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা দায়ের করেন। চারদলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন চারদলীয় জোট সরকারের উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু, ঢাকা সিটি করপোরেশনের তৎকালীন কমিশনার আরিফুল ইসলাম, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলনেতা শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল, হরকাতুল জিহাদনেতা মুফতি হান্নানসহ ১০ জন।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০০৩ সালে বিস্ফোরক মামলায় এবং ২০১৪ সালে হত্যা মামলায় তদন্তকারী সংস্থা পাঁচ জনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগ পত্র দখিল করে। কারাগারে রয়েছেন আদালতে একমাত্র স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া শাহাদাতউল্লাহ জুয়েল। পলাতক রয়েছেন সহোদর আনিসুল মোরছালিন ও মাহাবুবুল মুত্তাকিম। জামিনে রয়েছেন নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু। ১০১ জন সাক্ষীর মধ্যে বাদীসহ ১৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়। মামলার সাক্ষী নিহতদের ময়না তদন্তকারী কয়েক জন চিকিৎসক ও আসামির স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি রেকর্ডকারী ম্যাজিস্ট্রেট, তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ কয়েক জন সাক্ষী আদালতে হাজির না হওয়ায় তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। কয়েক জন সরকারি কর্মকর্তা সহ সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিতে না আসায় বিচারকাজে বিলম্ব হচ্ছে। এ পর্যন্ত যে কয়জন সাক্ষ্য দিয়েছেন, তাতেই বিচার হয় জানিয়ে আশাবাদ ব্যাক্ত করেন মামলার বাদী।
আপনার মতামত লিখুন :