গত সোমবার দুপুর তিনটা। ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরী বিভাগে কিছুটা ভীড়। এছাড়া হাসপাতালের নিচতলা ও দ্বিতীয় তলা একেবারে সুনশান নিরবতা। তৃতীয় তলার চিত্র কিছুটা ব্যতিক্রম। এখানে সার্জারী, শিশু, মহিলা ও ডেঙ্গু ওয়ার্ডে অর্ধশত রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। মহিলা ওয়ার্ডের দরজার সামনে একটি চেয়ারে বসে আছেন তানিয়া আক্তার নামে এক নারী। ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ায় তানিয়ার বা হাতে ক্যানোলা লাগানো। ডান হাতে তিনি ক্যানোলার সাথে সংযুক্ত স্যালাইন ধরে আছেন। এই অবস্থায় তার হাসপাতালের বেডে বিশ্রামে থাকার কথা। তবে কি কারণে এখানে বসে থাকা জানতে চাইলে তানিয়া জানান, তার স্বামী নিচ তলায় জরুরী বিভাগে গেছেন স্টাফদের পানির বিষয়ে বলতে। ৩ ঘন্টা ধরে তৃতীয় তলার পানি নেই। কর্তৃপক্ষকে জানানোর পরও কোনো কাজ হয়নি। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করেও টয়লেটে যেতে পারছেন না।
একই অবস্থা বাদবাকি রোগীদের। কিছুক্ষণ পরই তানিয়ার স্বামী আনোয়ার হোসেন উপরে আসেন। ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি বলেন, এটা কিসের হাসপাতাল? অপরিষ্কার, দুপুরের পর ডাক্তার পাওয়া যায়না, খাওয়া (খাবার) ভালোনা, কিছুই ভালোনা। ৩ ঘন্টা ধইরা পানি নাই। এভাবে কি একটা হাসপাতাল চলতে পারে? কয়বার বলে আসলাম পানি নাই কিন্তু তাগো কোনো খবর নাই।
রাকিবুল ইসলাম নামে আরেক রোগীর স্বজন বলেন, তিনবার ছোট ভাইকে টয়লেটে নিয়ে গেসি কিন্তু একবারও পানি নাই। বালতি কিনে হাসপাতালের বাহিরের এক মসজিদ থেকে পানি আনতে হইসে। এখানে রোগী টানবো না পানি টানবো বলেন? থালা বাসন, কাপড় ধোয়া থেকে শুরু করে কোনো কাজ করা যায়না। হাসপাতালের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার কাজও ভালোনা। সারাদিনে টাইম করে একদুই বার ডাক্তার আসে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালের এক স্টাফ বলেন, সমস্যার তো শেষ নাই। শুধু পানি না, আরো অনেক সমস্যা আছে। পানির সমস্যা মাঝে মধ্যে হয় এটা মিথ্যা কথা না। এটার টেকসই সমাধান করতে হলে সবকিছু নতুন করে ঠিকঠাক করতে হবে। বড় স্যারেরা সবকিছুই জানে। তাদের হাতে ক্ষমতা আছে। যদি কিছু করার থাকে তাহলে তারাই করতে পারবে।
তবে এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সিভিল সার্জন ডাক্তার মশিউর রহমানকে একাধিক বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।








