নারায়ণগঞ্জ । শনিবার
২৫শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ,
৯ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন
প্রভাবশালীদের ভিড়ে আলোচনায় রুহুল আমিন শিকদার

নতুন সীমানা বিন্যাসের পর নির্বাচনী আলাপনে বাড়তি হাওয়া লেগেছে নারায়ণগঞ্জে। তসফিল ঘোষণা না হলেও এই জেলার পাঁচটি আসনেই বিএনপি নেতাদের মাঝে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। সময় যত গড়াচ্ছে, ততই যেন পাল্টে যাচ্ছে সমীকরণ। এতে বলয় ভিত্তিক রাজনীতির কৌশলেও পরিবর্তন আনতে শুরু করেছেন প্রভাবশালী নেতারা। বিশেষ করে, নারায়ণগঞ্জের পাঁচটি আসনের মধ্যে ফতুল্লা তথা সদর উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে দেখা এমন চিত্রই বিরাজ করছে। জেলার অন্যতম গুরুত্ববহন করা এই আসনটিতে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রভাবশালী নেতাদের সংখ্যা ঢের বেশি। তবে প্রভাবশালী নেতাদের ভিড়েও আলোচনায় উঠে এসেছেন ফতুল্লা থানা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও বিএনপির ত্যাগী এবং পরীক্ষিত নেতা হিসেবে পরিচিতি পাওয়া রুহুল আমিন শিকদার।


আসনটির সাবেক এমপি ও কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য বীরমুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন থেকে শুরু করে ২০০৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপির দলীয় মনোয়নপ্রাপ্ত মোহাম্মদ শাহ আলম, জেলা বিএনপির বর্তমান আহবায়ক ও বিগত সময়ে মনোনয়নের চিঠিপ্রাপ্ত অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, জেলা বিএনপির আলোচিত যুগ্ম আহবায়ক মাসুকুল ইসলাম রাজীব, ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু, নারায়ণগঞ্জ জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনির মতো সম্ভাবনাময়ী নেতারা দলীয় মনোনয়ন প্রাপ্তির প্রত্যাশায় সরব হয়েছেন।


তাদের বাহিরে এই আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চেয়ে আলোচনার তুঙ্গে ছিলেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী। ফতুল্লা বিএনপির অন্যতম চালিকা শক্তি হয়ে উঠেছিলেন সম্ভাবনাময়ী ও প্রভাবশালী এই নেতা। থানা বিএনপি তথা নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের মূলধারার সিংহভাগ নেতারা ছিলেন রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর নেতৃত্বে। ফতুল্লার প্রতিটি ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও পাড়া মহল্লায় রয়েছে রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর সুবিশাল কর্মী সমর্থক। এবারের আসন্ন নির্বাচনে রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী ছিলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনে দলীয় মনোনয়নের অন্যতম দাবিদার।


যদিও মামলা জনিত কারণে রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীকে দল থেকে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি। তবে থানা বিএনপির সাবেক এই সাংগঠনিক সম্পাদককে ঘিরেই ফতুল্লা তথা নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সিংহভাগ নেতাকর্মী তথা তার বলয়ে থাকা নেতাকর্মীরা রাজনীতির মাঠে পূর্বের ন্যায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।


এক্ষেত্রে বিএনপিতে থাকা রিয়াদ চৌধুরীর বৃহৎ এই বলয়টিকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন ফতুল্লা থানা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক রুহুল আমীন শিকদার। রিয়াদ চৌধুরীর নেতৃত্বে থাকা তার বিশাল কর্মী বাহিনী এখন দলীয় বা সাংগঠনিক কার্যপরিচালনায় রুহুল আমিন শিকদারের নেতৃত্বে সক্রিয় রয়েছেন। রুহুল আমিন শিকদার ইতিমধ্যেই নিজেকে বিএনপির নিবেদিত ও পরীক্ষিত নেতা হিসেবে রাজপথে প্রমাণও করেছেন। নেতৃত্বগুণ থাকায় ফতুল্লা বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের বড় অংশটি রুহুল আমিন শিকদারকে তাদের রাজনৈতিক অভিভাবক মানেন। রুহুল আমিন শিকদারও ফতুল্লা অঞ্চলে নিজের নেতৃত্বের বিকাশ ঘটিয়ে চলেছেন। দলের পাশাপাশি সামাজিক ও জনকল্যাণকর কর্মসূচিতে রুহল আমিন নিজের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির মাধ্যমে এলাকার সাধারণ ভোটার মাঝেও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন এই অঞ্চলের বিএনপি নেতাকর্মী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা।


একাধিক সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনের আগে রিয়াদ চৌধুরীর বিষয়ে দলের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া না হলে তার পক্ষে বিএনপির দলীয় মনোয়ন পাওয়ার সম্ভাবনা থাকছে না। সেক্ষেত্রে এই আসনে রিয়াদ চৌধুরীর অবর্তমানে বিএনপির বৃহৎ এই বলয় থেকে দলীয় মনোনয়নের লড়াইয়ে প্রকাশ্যেই লড়তে দেখা যেতে পারে রুহুল আমিন শিকদারকে। সেই লক্ষ নিয়েই রাজনীতির মাঠে রুহুল আমিনকে ঘিরে তৎপর রয়েছেন স্থানীয় বিএনপি নেতাদের বড় একটি অংশ।


জানা গেছে, বিএনপি অঙ্গণে আরেক পরীক্ষিত নেতা রুহুল আমিন শিকদার। দলের দুঃসময়ের যেকোনো আন্দোলন সংগ্রামে সরাসরি রাজপথে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন তিনি। ছাত্রদলের রাজনীতি থেকে উঠে আসা এই উদীয়মান তরুণ নেতা নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ সম্পাদক পদে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি ফতুল্লা থানা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক পদে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রেখে চলেছেন। তথ্য বলছে, রুহুল আমিন শিকদার নারায়ণগঞ্জের প্রায় প্রতিটি থানায় দায়েরকৃত রাজনৈতিক মামলায় আসামী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের আমলে কারাবরণ করেছেন এমনকি জামিনে থাকলেও ফেরারি জীবন-যাপন করেছেন। এরপরও দলের যেকোনো কর্মসূচি কিংবা আন্দোলন সংগ্রামে রুহুল আমিনকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখতে দেখা গেছে। তিনি ফতুল্লা থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীর সাথে এক ব্যনারে রাজনীতি করছেন। তবে রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হলেও তাকে দল থেকে বহিস্কার করায় তার বিপরিতে এই বলয় থেকে এখন রুহুল আমিন শিকদারকে নিয়ে আলোচনা দিন দিন জোড়ালো হচ্ছে। তাকে ঘিরে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন থেকে আগামীর পরিকল্পনা ও স্বপ্ন বুনতে শুরু করেছেন দলীয় কর্মী সমর্থকরা। ফলে আগামীতে এই আসনের সমীকরণ ঠিক কোথায় গিয়ে দাঁড়ায় তা নিয়ে যেন জল্পনা কল্পনার ডাল-পালা ক্রমেই বিস্তৃত হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >