কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে লালন মেলায় বিশাল মাদকের হাট বসেছে। ছেউড়িয়ায় লালন আখড়াবাড়ির মাঠে প্রায় ৩০০টি মাদকের দোকান বসেছে। সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে প্রকাশ্যে দিনরাত মাদক বিক্রি ও মাদক সেবন করা হচ্ছে। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রভাবশালীদের ছায়াতলে মাদকের হাট জমজমাট হয়ে উঠেছে৷ প্রশাসনের উপস্থিতিতে প্রতিদিন লাখলাখ টাকার মাদক বিক্রি করা হয়
সেখানে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ মাদকে জড়িয়ে পড়ছেন। আশঙ্কাজনক হারে মাদক কেনা-বেচা ও সেবনের কারণে মেলার মাঠে অপরাধ বেড়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দর্শনার্থীরা ও গণমাধ্যমকর্মীরা। এতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কুষ্টিয়ার সচেতন মহলের মানুষ। মাদক ব্যবসায়ীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন। লালন মেলাকে মাদকমুক্ত করা দাবি জানিয়েছেন তারা৷
স্থানীয়রা বলেন, লালন মেলা মাদকের মেলায় পরিনত হয়েছে। লালন মেলায় মাদকের হাট বসেছে। শতশত মাদকের দোকানে অবাধে মাদক বিক্রি করা হচ্ছে। শতশত মাদকের আস্তানা গড়ে তোলা হয়েছে। দিনরাত মাদক বিক্রি ও মাদক সেবন করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনেই মাদক বিক্রি করা হচ্ছে এবং মাদক সেবন করা হচ্ছে৷ অথচ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে৷ প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রভাবশালীদের ছায়াতলে কোটি কোটি টাকার মাদক কেনা-বেচা হচ্ছে। প্রশাসনের নিরব ভূমিকায় আমরা চরম ক্ষোভ প্রকাশ করছি। আমরা মাদক ব্যবসায়ীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি, তাদের আইনের আওতায় আনা হোক। লালন মেলাকে মাদকমুক্ত করা হোক।দর্শনার্থীরা বলেন, লালন মেলায় ঘুরতে এসে বিপাকে পড়েছি। লালন মেলা যেন মাদকের মেলা। আগে জানলে এই মাদকের রাজ্যে আসতাম না। অবাক করা বিষয় হলে- আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনেই মাদক বিক্রি ও মাদক সেবন করা হচ্ছে৷ অসংখ্য মাদকের দোকান ও মাদক সেবনের আস্তানা গড়ে তোলা হয়েছে। পুলিশের পাহারায় মাদকের হাটে মাদক ব্যবসা ও সেবন করা হচ্ছে। গাঁজার ধোঁয়ার গন্ধে দম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এই এলাকার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, পুলিশ মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে না। মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।

লালন ফকিরের ভক্ত ও অনুসারীরা বলেন, লালন ফকির কখনোই মাদক সেবন করতেন না। লালন অনুসারীরাও মাদকের সাথে জড়িত না। কিন্তু বিশাল একটা মাদক চক্র লালন মেলাকে মাদকের মেলায় পরিনত করেছে। মেলার মাঠে শতশত মাদকের দোকান বসেছে। সেখানে অবাধে মাদক বিক্রি ও মাদক সেবন করা হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সামনে মাদক বিক্রি ও সেবন করা হলেও তারা অদৃশ্য কারণে নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে। পুলিশের পাহারায় মাদকের হাট চলছে৷ এটা খুবই দুঃখজনক ও হতাশাজনক। লালন মেলাকে মাদকমুক্ত করার দায়িত্ব প্রশাসনের। অথচ তারাই মাদক ব্যবসায়ীদের পাহারা দিচ্ছেন, সহযোগিতা করছেন। এটা আমাদের সম্মানহানী হচ্ছে। আমরা অসম্মানিত হচ্ছি।
অসাম্প্রদায়িকতা ও মানবতার প্রতীক ফকির লালন সাঁই। তার জীবন দর্শন যুগে যুগে মানবতার বার্তা বিলিয়ে যাচ্ছে। তার জীবন দর্শন মানুষকে প্রভাবিত করেছে। আগামী ১৭ অক্টোবর লালন ফকিরের ১৩৫ তম তিরোধান দিবস। এ উপলক্ষে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৩ দিনব্যাপী সংগীতানুষ্ঠান ও লালন মেলা। লালন মেলা শুরুর আগেই সেখানে গাজার হাট বসেছে। প্রকাশ্যে শতশত গাজার দোকানে দিনরাত গাজা বিক্রি ও সেবন করা হচ্ছে। প্রশাসনের সামনে এসব অপরাধ করছে মাদক কারবারিরা। অথচ অদৃশ্য কারণে প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে কোনো প্রকার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন না। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দর্শনার্থীরা, স্থানীয়রা ও সচেতন মহলের মানুষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লালন মেলার মাঠ, কালি নদীর পাড়ঘেঁষে বসেছে শতশত মাদকের দোকান। এছাড়াও শ্মশানঘাটে গাঁজার দোকান গড়ে তোলা হয়েছে। প্রশাসনের উপস্থিতিতে সেখানে দিনে ও রাতে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করা হচ্ছে। সেখানে কিশোর, যুবক, স্কুল কলেজের শিক্ষার্থী সহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ মাদক সেবন করছেন। এতে লালন মেলার পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতিতে মাদক বিক্রি ও সেবন করা হলেও তারা কোনো আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন না। লালন মেলা মাদকের হাটে পরিনত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দর্শনার্থী ও স্থানীয়রা। তারা লালন মেলাকে মাদকমুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন।
কুষ্টিয়ার সচেতন মহলের মানুষ বলেন, আখড়াবাড়িতে প্রতি বছর দুইবার লালন মেলা অনুষ্ঠিত হয়। লালন আখড়াবাড়িতে মাঠে প্রায় ৩০০ মাদকের দোকান ও আস্তানা গড়ে তুলেছেন মাদক ব্যবসায়ীরা। সেখানে প্রশাসনের উপস্থিতিতে দিনরাত মাদক বিক্রি করা হয়। কোটি কোটি টাকার মাদক বেচাকেনা ও সেবন করা হয়। লালন মেলা মাদকের হাটে পরিনত হয়েছে। শিশু কিশোর থেকে শুরু করে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ মাদক সেবন করছে। অথচ মাদক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেয়া হয় না।বিগত কয়েক বছর ধরে কুষ্টিয়াতে বাউল ফকির লালনের আখড়া বাড়িতে মেলার নামে প্রশাসনের উপস্থিতিতে প্রকাশ্যে মাদক সেবনের মহোৎসব চলে আসছে। যার ফলশ্রুতিতে যুব সমাজ ও আগামী প্রজন্ম বিপথগামী হচ্ছে। মাদকের অর্থ সংগ্রহ করতে গিয়ে বিপথগামী যুব-সমাজ চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই এমনকি খুনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। এমতাবস্থায় কিশোর ও যুব-সমাজকে বাঁচাতে জেলার আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে ধর্ম, বর্ণ দল-মত নির্বিশেষে প্রকাশ্যে মাদক সেবনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিন। আগামী ১৭, ১৮,১৯ অক্টোবরে লালন তিরোধান দিবস অনুষ্ঠিত হবে। তবে সেসময় যদি লালন আখড়ায় কোনো রকম মাদকের সেবন দেখি আমরা তাহলে চুপ করে বসে থাকব না। তখন কুষ্টিয়ার সর্বস্তরের জনগণ মাদকের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আসবে।






