সিরাজগঞ্জে নবজাতক চুরির ঘটনায় দায়ের করা মানবপাচার মামলায় এক নারীকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আরও পাঁচ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২০ অক্টোবর ২০২৫) দুপুরে সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারক বেগম সালমা খাতুন এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে আসামি মোছা. আলপনা খাতুনকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ২০০০ (সংশোধনী ২০০৩) এর ৭ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে দুই মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আদালত নির্দেশ দেন— জরিমানার অর্থ ভুক্তভোগী পরিবারের হাতে প্রদান করতে হবে।একই মামলায় আসামি মোছা. ছায়রন বেওয়া, মোছা. মিনা খাতুন, মোছা. মায়া খাতুন, মো. রবিউল ইসলামসহ আরও পাঁচজনের বিরুদ্ধে মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন, ২০১২-এর ৭/৮/১০(২) ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাদের খালাস প্রদান করা হয়।
মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০২১ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে মোছা. সবিতা খাতুন প্রসববেদনা অনুভব করলে তাকে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল সাখাওয়াত মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন সকালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে এক নবজাতকের জন্ম হয়।ঐদিন বিকেলে এক বোরখাপরা অজ্ঞাত নারী নবজাতককে কোলে নিয়ে আদর করার ভান করে শিশুটিকে নিয়ে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে হাটিকুমরুল হাইওয়ে পুলিশ ও সলঙ্গা থানা পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে নবজাতকসহ অভিযুক্ত নারীকে সিরাজগঞ্জের আলোকদিয়া গ্রাম থেকে আটক করে। এ সময় আরও একটি মৃত নবজাতকের লাশ উদ্ধার করা হয়, যা পরবর্তীতে ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ তারিখে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া শিশু হিসেবে শনাক্ত করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ও সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এর পাবলিক প্রসিকিউটর মো. মাসুদুর রহমান মাসুদ বলেন, মামলাটি অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে তদন্ত করা হয়েছে। একটি শিশুকে জীবিত উদ্ধার করা সম্ভব হওয়ায় মামলার প্রমাণ আরও সুদৃঢ় হয়েছে। আদালতের এই রায় মানবপাচার প্রতিরোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হবে।







