চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম পাসের হার রেকর্ড করেছে। ২০২৪ সালে গড় পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ, যা এবার কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৫৮ দশমিক ৮৩ শতাংশে। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় এবার পাসের হার প্রায় ১৯ শতাংশ কমেছে।
একইসঙ্গে আশঙ্কাজনকভাবে কমেছে জিপিএ ৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা। গত বছর যেখানে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন শিক্ষার্থী জিপিএ ৫ পেয়েছিল, এবার তা অর্ধেকে নেমে এসেছে — ৬৯ হাজার ৯৭ জনে। অর্থাৎ গত বছরের তুলনায় ৭৬ হাজার ৮১৪ জন কম শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ গ্রেড অর্জন করেছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকাল ১০টায় দেশের ১১টি শিক্ষা বোর্ডের ফলাফল একযোগে প্রকাশ করা হয়। বাংলাদেশ আন্তশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক খন্দোকার এহসানুল কবির সংবাদ সম্মেলনে এ ফল ঘোষণা করেন।
ফলাফলে দেখা যায়, ঢাকা বোর্ডে পাসের হার সর্বোচ্চ ৬৪ দশমিক ৬২ শতাংশ,রাজশাহী বোর্ডে ৫৯.৪০ শতাংশ,চট্টগ্রাম বোর্ডে ৫২.৫৭ শতাংশ,দিনাজপুর বোর্ডে ৫৭.৪৯ শতাংশ ,ময়মনসিংহ বোর্ডে ৫১.৫৪ শতাংশ ,কুমিল্লা বোর্ডে ৪৮.৮৬ শতাংশ, জিপিএ ৫ পেয়েছেন ২ হাজার ৭০৭ জন ,যশোর বোর্ডে ৫০.২০ শতাংশ, জিপিএ ৫ পেয়েছেন ৫ হাজার ৯৯৫ জন ,বরিশাল বোর্ডে ৬২.৫৭ শতাংশ, জিপিএ ৫ পেয়েছেন ১ হাজার ৬৭৪ জন ,সিলেট বোর্ডে ৫১.৮৬ শতাংশ, জিপিএ ৫ পেয়েছেন ১ হাজার ৬০২ জন ,বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৭৫.৬১ শতাংশ ,কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৬২.৬৭ শতাংশ।
এবার মোট ৩৪৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শতভাগ শিক্ষার্থী পাস করেছে, অপরদিকে ২০২টি প্রতিষ্ঠানের একজনও পাস করতে পারেনি, যা শিক্ষার মান নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন তুলেছে।
২০২০ সালে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে অটোপাসে সবাই উত্তীর্ণ হয়।
এরপর ২০২১ সালে পাসের হার ছিল—সাধারণ বোর্ডে ৯৫.৫৭% ,কারিগরি বোর্ডে ৯২.৮৫% ,মাদরাসা বোর্ডে ৯৫.৪৯%।
২০২২ সালে গড় পাসের হার ছিল ৯৫.২৬ শতাংশ।২০২৩ সালে ৭৮.৬৪ শতাংশ এবং২০২৪ সালে ৭৭.৭৮ শতাংশ।তবে ২০২৫ সালের ফলাফল সেই ধারার বিপরীতে নেমে এসেছে পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে, যা শিক্ষা ব্যবস্থায় মান, প্রশ্নের কঠিনতা, কিংবা মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে নানা আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
শিক্ষাবিদরা বলছেন, এ ফলাফল শিক্ষার্থীদের প্রস্তুতির ঘাটতি, পাঠ্যক্রমের পরিবর্তন ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার কঠোরতার প্রতিফলন।








