ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশ পরিদর্শনে গিয়ে তীব্র যানজটে আটকা পড়েন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। শেষ পর্যন্ত গন্তব্যে পৌঁছাতে বাধ্য হয়ে তিনি মোটরসাইকেলে চড়েন। তবে তার যাত্রা ঘিরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা।
বিতর্কের মূল কেন্দ্র—উপদেষ্টাকে বহনকারী মোটরসাইকেলের চালকের মাথায় হেলমেট ছিল না। এ ঘটনায় হেলমেটবিহীন চালকের শাস্তির দাবি জানিয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সংগঠন স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্স অব বাংলাদেশ (পুসাব)।
বুধবার (৮ অক্টোবর) বিকেলে সংগঠনটির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে বলা হয়,
“ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক প্রশস্তকরণ কাজ পরিদর্শনে যান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। উপদেষ্টাকে বহনকারী হেলমেটবিহীন বাইকারসহ বহরের সব চালককে ট্র্যাফিক আইনে শাস্তির আওতায় আনা হোক।”
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে পুসাবের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জাগো নিউজকে বলেন, “আমাদের ফেসবুক পেজ থেকেই সব অফিসিয়াল বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। ফলে এই পোস্টই আমাদের অফিসিয়াল অবস্থান।”
বর্তমানে পুসাবের ফেসবুক পেজ অনুসরণ করছেন ৭ লাখ ২৫ হাজারেরও বেশি ব্যবহারকারী, যাদের বেশিরভাগই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। পোস্টটি ঘিরে কমেন্ট সেকশনেও চলছে উত্তপ্ত আলোচনা।
একজন ব্যবহারকারী হাজ্জাজ বিন সিয়াম লিখেছেন,
“কোনো নেতার বহরে আজও দেখলাম না কেউ হেলমেট পরে বাইকে উঠছে। এটাই বাস্তব বাংলাদেশ।”
আরেকজন, আরিফুল ইসলাম মামুন মন্তব্য করেছেন,
“আইন অমান্য করে হেলমেট ছাড়াই মোটরসাইকেল চালানো হচ্ছে—তাও আবার একজন উপদেষ্টার সামনে!”
তবে কেউ কেউ বিষয়টিকে অতিরিক্ত সংবেদনশীল হিসেবে দেখছেন। শিক্ষার্থী জুনাইদ ইসলাম জুপন লিখেছেন,
“এটা একদম আজাইরা বিষয়। তিন ঘণ্টার জ্যামে আটকে থাকা অবস্থায় হেলমেট জোগাড় করা কতটা সম্ভব? সেখানে হেলমেট না থাকাটাই বাস্তবতা।”
জানা গেছে, বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে আশুগঞ্জের হোটেল উজানভাটি থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড়ে যাওয়ার পথে উপদেষ্টার গাড়িবহর বাহাদুরপুর এলাকায় ভয়াবহ যানজটে পড়ে। মাত্র ১৫ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে সময় লাগে প্রায় তিন ঘণ্টা। পরে মোটরসাইকেলে চড়ে দুপুর ১টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছান তিনি।
এদিকে, আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত ৫১ কিলোমিটার সড়ক চারলেনে উন্নীত করার কাজ ধীরগতিতে চলায় মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া অংশে দীর্ঘদিন ধরে যানজট লেগে আছে। বিশেষ করে আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে সরাইল-বিশ্বরোড পর্যন্ত প্রায় ১২ কিলোমিটার জুড়ে গর্ত ও সংস্কার কাজের কারণে গত কয়েকদিন ধরেই যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।
পরিদর্শনকে ঘিরে রাস্তা সংস্কারের তাড়াহুড়ো শুরু হয় গত রোববার থেকে। এক পাশ বন্ধ রেখে চলা এই কাজের প্রভাবেই আরও বেড়ে যায় যানজটের মাত্রা। উপদেষ্টার বুধবারের সফরে সেই জটই শেষ পর্যন্ত তাকে মোটরসাইকেলযাত্রায় বাধ্য করে।






